হার্টের ব্যথার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার- জেনে নিন জীবন বাঁচানো কিছু টিপস!

হার্টের ব্যথার লক্ষণ

হার্ট হলো আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা দেহের প্রতিটি কোষে রক্ত সরবরাহ করে। কিন্তু আজকের ব্যস্ত ও আধুনিক জীবনে অনেকে অজান্তেই হার্টের স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলা করে থাকেন। হার্টের ব্যথার লক্ষণ যেমন হঠাৎ বুকে চাপ অনুভব, শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব বা অস্বাভাবিক থরথরে যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা – এগুলো নিঃসন্দেহে আমাদের শরীরের জন্য একটি সতর্কবার্তা। গবেষণা অনুযায়ী, হার্টের ব্যথার লক্ষণ সম্পর্কে সঠিক ও সময়োচিত জ্ঞান না থাকলে প্রাথমিক চিকিৎসার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। এমনকি কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, হার্টের ব্যথার লক্ষণ অনেক সময়ই প্রাথমিক পর্যায়েই লুকিয়ে থাকে, যার ফলে রোগের অবস্থা গুরুতর হয়ে ওঠে।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, হার্টের ব্যথার লক্ষণ কেবলমাত্র বয়স্কদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; তরুণ এবং সুস্থ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও কখনো কখনো হার্টের ব্যথার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি। এই আর্টিকেলে আমরা জানবো হার্টের ব্যথার লক্ষণ কীভাবে চিহ্নিত করা যায়, এর পেছনের কারণগুলি কী এবং প্রতিকার হিসেবে কী কী উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে।

কেন হার্টের ব্যথা অবহেলা করা বিপজ্জনক?

হার্টের ব্যথা অবহেলা করা বিপজ্জনক কারণ এটি অনেক সময় মারাত্মক হৃদরোগের পূর্বাভাস হতে পারে। বেশিরভাগ মানুষই বুকের ব্যথাকে গ্যাসের সমস্যা বা সাধারণ অস্বস্তি ভেবে উপেক্ষা করেন, কিন্তু এটি হৃদরোগ, এনজাইনা (Angina) বা হার্ট অ্যাটাকের (Myocardial Infarction) লক্ষণ হতে পারে। হার্টের ব্যথা সাধারণত বুকের মাঝখানে চাপ অনুভূত হওয়া, জ্বালাপোড়া করা বা শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার মতো উপসর্গের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। কখনো কখনো এই ব্যথা হাত, ঘাড়, পিঠ বা চোয়ালে ছড়িয়ে যেতে পারে। সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হলো, অনেক ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের আগেও রোগীরা তেমন কোনো স্পষ্ট লক্ষণ টের পান না, যাকে “Silent Heart Attack” বলা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৪৫% হার্ট অ্যাটাক নীরবে ঘটে, যেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি বুঝতেই পারেন না যে তার হৃদপিণ্ড মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

একটি চমকে দেওয়া তথ্য হলো, হার্টের ব্যথাকে উপেক্ষা করার ফলে মাত্র ১ ঘণ্টার মধ্যেই প্রাণহানির ঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। জরুরি চিকিৎসা না পেলে হার্ট অ্যাটাকের পর প্রতি মিনিটে প্রায় ৫,০০,০০০ হার্ট কোষ নষ্ট হতে থাকে, যা স্থায়ীভাবে হার্টের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। আরও বিস্ময়কর বিষয় হলো, কিছু মানুষ বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীরা ব্যথা ছাড়াই হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন, কারণ তাদের স্নায়ুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত থাকায় ব্যথার সংকেত মস্তিষ্কে পৌঁছায় না। এছাড়া, রাতে ঘুমের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কারণ তখন শরীরের ব্যথা গ্রহণ করার ক্ষমতা কিছুটা কমে যায় এবং রক্তচাপ পরিবর্তনের ফলে হার্টের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। তাই বুকের ব্যথা বা সামান্য অস্বস্তিকেও গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত ডাক্তারি পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে এটি মৃত্যু বা স্থায়ী পঙ্গুত্বের কারণ হতে পারে।

হার্টের ব্যথা বনাম সাধারণ বুকের ব্যথা

অনেকেই বুকের ব্যথাকে হার্টের ব্যথা ভেবে আতঙ্কিত হন, আবার অনেকে প্রকৃত হার্টের ব্যথাকে সাধারণ গ্যাস বা পেশীর ব্যথা ভেবে অবহেলা করেন। এই দুটি ব্যথার মধ্যে পার্থক্য বোঝা অত্যন্ত জরুরি, কারণ হার্টের ব্যথা অবহেলা করলে এটি প্রাণঘাতী হতে পারে। বুকের ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, ফুসফুসের জটিলতা, পেশীর টান, স্নায়ুর চাপ বা মানসিক উদ্বেগ। তবে হার্টের ব্যথা সাধারণত একটি গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির ইঙ্গিত দেয় এবং এটি হৃদযন্ত্রের রক্ত সরবরাহের সমস্যার কারণে হয়ে থাকে।

হার্টের ব্যথার বৈশিষ্ট্য

হার্টের ব্যথা সাধারণত বুকের মাঝখানে বা বাঁ দিকের দিকে অনুভূত হয় এবং এটি একটি চাপা বা ভারী অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। অনেক সময় এটি বাম বাহু, চোয়াল, ঘাড়, পিঠ বা পেটের দিকেও ছড়িয়ে যেতে পারে। হার্টের ব্যথার সময় রোগী বুক চেপে ধরতে পারেন, মাথা ঘুরতে পারে, শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে, প্রচণ্ড ঘাম হতে পারে এবং বমির অনুভূতি আসতে পারে। এটি সাধারণত বিশ্রাম নেওয়ার পরেও কমে না এবং ১০-১৫ মিনিট বা তার বেশি স্থায়ী হতে পারে। হার্টের ব্যথা যদি ব্যায়ামের সময় বা মানসিক চাপে বৃদ্ধি পায় এবং বিশ্রামে বা নাইট্রোগ্লিসারিন গ্রহণের পর কমে, তাহলে এটি এনজাইনার লক্ষণ হতে পারে, যা হৃদযন্ত্রের রক্ত চলাচলে সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।

সাধারণ বুকের ব্যথার বৈশিষ্ট্য

সাধারণ বুকের ব্যথা সাধারণত গ্যাস্ট্রিক, অ্যাসিডিটি, পেশীর টান, স্নায়ুর চাপ, কিংবা ফুসফুসজনিত সমস্যার কারণে হতে পারে। গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণে বুকের মাঝখানে জ্বালাপোড়া অনুভূত হতে পারে, যা খাওয়ার পর বেড়ে যেতে পারে এবং অ্যান্টাসিড খেলে কমে যায়। পেশীজনিত ব্যথা সাধারণত বুকের নির্দিষ্ট একটি স্থানে অনুভূত হয় এবং চাপ দিলে বাড়তে পারে। একইভাবে, স্নায়ুর ব্যথা অনেক সময় বুকের কোনো নির্দিষ্ট অংশে তীক্ষ্ণ ব্যথার সৃষ্টি করে এবং এটি নিঃশ্বাসের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে। মানসিক উদ্বেগ বা প্যানিক অ্যাটাকের কারণে বুক ধড়ফড় করতে পারে, নিঃশ্বাস দ্রুত হতে পারে এবং হালকা ব্যথা অনুভূত হতে পারে, তবে এটি সাধারণত কয়েক মিনিটের মধ্যে কমে যায়।

কীভাবে নিশ্চিত হবেন ব্যথাটি বিপজ্জনক কি না?

  • ব্যথার প্রকৃতি – যদি ব্যথা চাপা, ভারী বা জ্বালাপোড়া ধরনের হয় এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে এটি হার্টের ব্যথা হতে পারে।
  • স্থান পরিবর্তন বা নড়াচড়া করলে ব্যথা বাড়ে কি না – পেশীজনিত বা স্নায়ুর ব্যথা সাধারণত শরীরের ভঙ্গি পরিবর্তন করলে বাড়তে পারে, কিন্তু হার্টের ব্যথা এমন হয় না।
  • শ্বাস নেওয়ার সাথে ব্যথার সম্পর্ক – যদি ব্যথা গভীর শ্বাস নেওয়ার সময় বাড়ে, তাহলে এটি সাধারণত হার্টের ব্যথা নয়, বরং ফুসফুস বা পাঁজরের ব্যথা হতে পারে।
  • ব্যথা বিশ্রামে কমে কি না – হার্টের ব্যথা সাধারণত বিশ্রামে কমে না, বরং অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে।

সতর্কতা ও করণীয়

যদি বুকের ব্যথা হয় এবং সেটি হার্টের ব্যথার লক্ষণগুলোর সাথে মিলে যায়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে যদি ব্যথার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, প্রচণ্ড ঘাম, বমি ভাব বা মাথা ঘোরা দেখা দেয়, তবে এক মুহূর্তও দেরি করা উচিত নয়। জরুরি ভিত্তিতে ইসিজি (ECG) বা ট্রোপোনিন টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এটি হার্টের সমস্যা কি না। অন্যদিকে, যদি ব্যথাটি গ্যাস্ট্রিক বা পেশীজনিত মনে হয়, তাহলে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, ওষুধ সেবন বা পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে তা সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে নিশ্চিত না হলে, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সর্বোত্তম উপায়।

 হার্টের ব্যথার প্রধান লক্ষণসমূহ

হার্টের ব্যথার প্রধান লক্ষণসমূহ

চেপে ধরা বা পুড়ানোর মতো অনুভূতি

হার্টের ব্যথার সবচেয়ে প্রচলিত লক্ষণ হলো বুকের মাঝখানে বা বাঁ দিকের দিকে চেপে ধরা বা ভারী কিছু বসে থাকার মতো অনুভূতি। এই ব্যথা সাধারণত একটানা ৫-১০ মিনিট বা তার বেশি স্থায়ী হতে পারে এবং ধীরে ধীরে তীব্র হয়ে ওঠে। অনেক রোগী এটি বুকের মধ্যে একটি শক্ত চাপ, সংকোচন বা সংকটময় অনুভূতি হিসেবে বর্ণনা করেন। ব্যথাটি বিশ্রামে কমে না এবং শারীরিক পরিশ্রম বা মানসিক চাপে আরও বাড়তে পারে। এটি মূলত হার্টে রক্তপ্রবাহের বাধার কারণে হয়, যা এনজাইনা (Angina) বা হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত হতে পারে। বিশেষ করে, যদি ব্যথার সাথে হাঁটতে বা কাজ করতে কষ্ট হয়, তবে তা বিপজ্জনক সংকেত হতে পারে।

এই ধরনের ব্যথা সাধারণ বুকের ব্যথার চেয়ে ভিন্ন, কারণ এটি সাধারণত গ্যাস্ট্রিক বা পেশীর ব্যথার মতো ছুরির আঘাতের মতো নয়, বরং একটি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকা পুড়ানোর মতো অনুভূতি দেয়। কিছু ক্ষেত্রে ব্যথাটি এতটাই তীব্র হয় যে রোগী অনুভব করেন, যেন বুকের ভেতরে আগুন ধরে গেছে। এমনকি কিছু রোগী এটিকে অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ভেবে অবহেলা করেন, যা মারাত্মক ভুল হতে পারে। তাই, বুকের মধ্যে যদি কোনো চেপে ধরা বা দগ্ধ হওয়ার মতো অনুভূতি হয় এবং তা সাধারণ ওষুধে কমে না, তবে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বুকে ব্যথার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট

হার্টের সমস্যার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া বা দম বন্ধ হয়ে আসার অনুভূতি। সাধারণত হার্টের ব্যথার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় কারণ হৃদপিণ্ড ঠিকমতো রক্ত পাম্প করতে পারছে না এবং শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছাতে পারছে না। অনেক সময় এই শ্বাসকষ্ট এতটাই তীব্র হয় যে রোগী মনে করেন, যেন তিনি পানির নিচে ডুবে যাচ্ছেন বা কোনো ভারী বোঝা তার বুকের ওপর চেপে বসেছে। এমন পরিস্থিতিতে রোগী যদি শুয়ে থাকেন, তবে শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে যেতে পারে এবং তিনি বসে থাকার চেষ্টা করেন।

শ্বাসকষ্ট হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিউর বা পালমোনারি এডেমার (ফুসফুসে তরল জমে যাওয়া) লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় শ্বাস নিতে গেলে বুক ব্যথা বাড়তে পারে এবং রোগী অস্থির হয়ে পড়েন। গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাকের আগে বা সময়কালে প্রায় ৬০% রোগী শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন, বিশেষ করে যারা আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন। তাই, যদি বুকের ব্যথার সঙ্গে শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, তবে এটি কখনোই অবহেলা করা উচিত নয় এবং যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

বাম হাতে, পিঠে বা চোয়ালে ব্যথা ছড়িয়ে পড়া

হার্টের ব্যথা শুধুমাত্র বুকের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং এটি শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে বাম হাতে, পিঠে এবং চোয়ালে ব্যথা অনুভূত হওয়া। এই ব্যথা সাধারণত ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে পারে। অনেক সময় এটি প্রথমে হাতে বা চোয়ালে অনুভূত হয়, এরপর মূল ব্যথা বুকের মধ্যে দেখা দেয়। বিশেষ করে বাম হাতে ব্যথা ছড়িয়ে পড়া হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ এটি হার্টের সাথে সংযুক্ত নার্ভ সংকেতের প্রতিফলন।

পিঠের ব্যথা, বিশেষ করে উপরের অংশে বা দুই কাঁধের মাঝখানে ব্যথা অনুভূত হওয়া, মহিলাদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের একটি প্রচলিত লক্ষণ। অনেক সময় রোগীরা এটিকে পেশীর টান বা ঘাড় ব্যথা মনে করেন, কিন্তু এটি যদি বিশ্রামেও কমে না এবং সাথে বুকের অস্বস্তি থাকে, তবে সতর্ক হওয়া জরুরি। তাছাড়া, চোয়ালে ব্যথা বিশেষ করে নিচের চোয়ালে অনুভূত হলে, এটি হার্টের সমস্যার অন্যতম উপসর্গ হতে পারে। এটি বিশেষভাবে বিপজ্জনক কারণ অনেকেই এটিকে দাঁতের ব্যথা বা স্নায়ুর ব্যথা ভেবে এড়িয়ে যান, ফলে সময়মতো চিকিৎসা নিতে দেরি হয়ে যায়।

মাথা ঘোরা ও দুর্বল অনুভূতি

হার্টের সমস্যার আরেকটি গুরুতর লক্ষণ হলো হঠাৎ মাথা ঘুরানো বা দুর্বল অনুভব করা। যখন হৃদযন্ত্র ঠিকমতো রক্ত পাম্প করতে পারে না, তখন ব্রেনে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না, যার ফলে রোগী মাথা ঘোরা, ভারসাম্যহীনতা বা এমনকি সংজ্ঞাহীনতার সম্মুখীন হতে পারেন। হার্ট অ্যাটাকের সময় বা আগে রোগীরা অনুভব করতে পারেন যে তারা কোনো কারণ ছাড়াই দুর্বল হয়ে পড়ছেন, হাঁটতে বা দাঁড়িয়ে থাকতে সমস্যা হচ্ছে, চোখের সামনে অন্ধকার দেখা যাচ্ছে।

এই লক্ষণটি বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, যারা উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসে ভুগছেন। অনেক সময় মাথা ঘোরা বা দুর্বল লাগাকে মানুষ সাধারণ ক্লান্তি, ঘুমের ঘাটতি বা ডিহাইড্রেশনের সমস্যা বলে মনে করেন, কিন্তু এটি যদি বুক ব্যথার সঙ্গে হয়, তবে তা মারাত্মক হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সঙ্গে সঙ্গে বসে পড়া এবং দ্রুত চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া উচিত, কারণ এটি হার্ট অ্যাটাকের আগাম সংকেত হতে পারে।

ঘাম হওয়া ও বমি ভাব

হার্টের সমস্যার অন্যতম উপসর্গ হলো অস্বাভাবিকভাবে বেশি ঘাম হওয়া ও বমি বমি ভাব অনুভব করা। হার্ট অ্যাটাকের সময় শরীর অক্সিজেন সংকট কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করে, যার ফলে স্নায়ুতন্ত্র সক্রিয় হয়ে পড়ে এবং প্রচুর ঠান্ডা ঘাম হতে পারে। এটি সাধারণ ঘামের মতো নয়, বরং রোগী অনুভব করবেন যেন তিনি তীব্র গরম বা অতিরিক্ত ভয় পাচ্ছেন। ঘাম সাধারণত কপাল, ঘাড়, হাত এবং বুকে বেশি হয় এবং শীতল অনুভূতি তৈরি করতে পারে।

বমি বমি ভাব বা পেটের অস্বস্তি হার্টের ব্যথার একটি কম পরিচিত লক্ষণ, যা বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। অনেক রোগী মনে করেন এটি গ্যাস্ট্রিক বা খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে হচ্ছে, কিন্তু এটি যদি বুকের ব্যথার সঙ্গে হয়, তবে তা হার্ট অ্যাটাকের সংকেত হতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক রোগী হার্ট অ্যাটাকের আগে খাবারে অরুচি, পেট ফাঁপা বা হালকা বমি ভাব অনুভব করেন। তাই, বুকের ব্যথার সঙ্গে যদি অতিরিক্ত ঘাম বা বমি ভাব দেখা দেয়, তবে এটি অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কেন হয় হার্টের ব্যথা? সম্ভাব্য কারণসমূহ

করোনারি আর্টারি ডিজিজ (হৃদরোগের মূল কারণ)

হার্টের ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ এবং প্রধান কারণ হলো করোনারি আর্টারি ডিজিজ (CAD), যা মূলত হার্টে রক্ত সরবরাহকারী ধমনীতে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থ জমে সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ার কারণে হয়। এই জমাটবদ্ধতা প্লাক (Plaque) তৈরি করে, যা রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে এবং হার্টের পেশিগুলো পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি পেতে ব্যর্থ হয়। ফলস্বরূপ, হার্টের ব্যথা (এনজাইনা) অনুভূত হয় এবং এটি যদি সম্পূর্ণ ব্লক হয়ে যায়, তাহলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। সাধারণত, করোনারি আর্টারি ডিজিজ দীর্ঘ সময় ধরে ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর ঝুঁকি বেড়ে যায়।

এই রোগের কারণ মূলত অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা এবং বংশগত কারণ। অতিরিক্ত ফাস্টফুড, তেল-চর্বিযুক্ত খাবার এবং উচ্চ পরিমাণে চিনি ও লবণযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করলে ধমনীর দেয়ালে চর্বি জমে এবং রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে, যারা ধূমপান করেন, তাদের করোনারি আর্টারি ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ বেশি। তাই, যদি বুকের মাঝখানে চেপে ধরা বা ভারী অনুভূতি হয় এবং তা বিশ্রামেও না কমে, তাহলে এটি CAD-এর লক্ষণ হতে পারে এবং অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল

উচ্চ রক্তচাপ (Hypertension) এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি হার্টের ব্যথার অন্যতম বড় কারণ। যখন রক্তচাপ দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত মাত্রায় থাকে (সাধারণত ১৪০/৯০ mmHg বা তার বেশি), তখন এটি হৃদপিণ্ডের ধমনীগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। ফলে, ধমনীর স্থিতিস্থাপকতা কমে যায় এবং এতে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, যা হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে হার্টকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়, যা ধীরে ধীরে হার্টের পেশিগুলো দুর্বল করে দেয় এবং বুকের ব্যথা দেখা দেয়।

অন্যদিকে, অতিরিক্ত কোলেস্টেরল ধমনীর দেয়ালে জমে ‘অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস’ (Atherosclerosis) তৈরি করে, যা হার্টের রক্তপ্রবাহ কমিয়ে দেয় এবং এনজাইনা বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। দুই ধরনের কোলেস্টেরল আছে—ভালো (HDL) ও খারাপ (LDL)। যদি শরীরে LDL কোলেস্টেরল বেশি থাকে, তাহলে এটি ধমনীর মধ্যে চর্বি জমার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। তাই, উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ জরুরি, নতুবা এটি হার্টের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।

ডায়াবেটিস ও স্থূলতা

ডায়াবেটিস এবং অতিরিক্ত ওজন হার্টের ব্যথার অন্যতম কারণ, যা সরাসরি হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ বেশি কারণ উচ্চ রক্তে শর্করার মাত্রা ধমনীগুলোর অভ্যন্তরীণ আস্তরণ নষ্ট করে দেয়, ফলে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ডায়াবেটিসের কারণে শরীরের ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, যা ধমনীর দেয়ালে প্লাক জমা করে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, অনেক ডায়াবেটিস রোগী হার্ট অ্যাটাকের সময় সাধারণত ব্যথা অনুভব করেন না, বরং তারা শ্বাসকষ্ট বা অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করেন, যা ‘Silent Heart Attack’ হিসেবে পরিচিত।

অন্যদিকে, স্থূলতা (Obesity) বা অতিরিক্ত ওজন হৃদরোগের অন্যতম কারণ, কারণ এটি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষ করে, পেটের চারপাশে অতিরিক্ত চর্বি জমলে তা হার্টের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অতিরিক্ত ওজনের কারণে হৃদপিণ্ডকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাজ করতে হয়, যা দীর্ঘমেয়াদে হার্টের পেশিগুলো দুর্বল করে দিতে পারে। তাই, ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হলে কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে হবে, নতুবা এটি হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠতে পারে।

মানসিক চাপ ও উদ্বেগ

হার্টের ব্যথার অন্যতম কারণ মানসিক চাপ ও উদ্বেগ, যা সরাসরি হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতার ওপর প্রভাব ফেলে। যখন আমরা চরম মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীর ‘স্ট্রেস হরমোন’ (যেমন: কর্টিসল ও অ্যাড্রেনালিন) নিঃসরণ করে, যা হৃদস্পন্দন দ্রুততর করে এবং রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। দীর্ঘমেয়াদে, এই অতিরিক্ত চাপ হার্টের ধমনীগুলোকে সংকুচিত করে এবং এনজাইনার মতো ব্যথা সৃষ্টি করে। অনেক ক্ষেত্রে, মানসিক উদ্বেগ হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে, বিশেষ করে যারা ইতোমধ্যে উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগছেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ মাত্রার মানসিক চাপ স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৫০% পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। উদ্বেগের ফলে অনেক সময় প্যানিক অ্যাটাক (Panic Attack) এর মতো লক্ষণ দেখা দেয়, যা হার্ট অ্যাটাকের সঙ্গে মিল থাকতে পারে। প্যানিক অ্যাটাকের সময় রোগীরা মনে করেন, যেন তারা শ্বাস নিতে পারছেন না, বুকে চাপ লাগছে, হাত-পা অবশ হয়ে আসছে এবং মৃত্যুর ভয় পাচ্ছেন। যদিও এটি সরাসরি হার্ট অ্যাটাক নয়, তবে এটি হার্টের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে। তাই, মানসিক চাপ কমাতে মেডিটেশন, ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক প্রশান্তির চর্চা করা উচিত, নতুবা এটি হৃদযন্ত্রের জন্য মারাত্মক বিপদ বয়ে আনতে পারে।

হার্টের ব্যথা হলে করণীয়

হার্টের ব্যথা হলে করণীয়

প্রাথমিক চিকিৎসা ও ঘরোয়া ব্যবস্থা

হার্টের ব্যথা অনুভূত হলে প্রথমেই আতঙ্কিত না হয়ে শরীরকে শান্ত রাখা এবং বিশ্রাম নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম, মানসিক চাপ বা হজমের সমস্যার কারণে বুকের ব্যথা হতে পারে, যা কিছুক্ষণ পর কমে যেতে পারে। তবে, যদি ব্যথা ক্রমাগত বাড়তে থাকে এবং স্বাভাবিক শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। প্রথমেই একটি স্বস্তিদায়ক স্থানে বসে বিশ্রাম নেওয়া, ঢিলেঢালা কাপড় পরিধান করা এবং গভীর শ্বাস নেওয়া সহায়ক হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে, ঠাণ্ডা পানি পান করলে কিংবা ধীরে ধীরে শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করলে সাময়িক স্বস্তি পাওয়া যায়।

হার্টের ব্যথা হলে ঘরোয়া কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, যা তাৎক্ষণিক স্বস্তি দিতে পারে। যদি ব্যথাটি অ্যাসিডিটির কারণে হয়, তাহলে এক চামচ বেকিং সোডা বা এক গ্লাস উষ্ণ পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে আরাম পাওয়া যেতে পারে। এছাড়া, আদা বা রসুন চিবিয়ে খেলে রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক হতে পারে, যা হার্টের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, আঙ্গুরের রস, হলুদ দুধ বা গরম চায়ের সঙ্গে মধু মিশিয়ে পান করলে বুকের ব্যথা কমে যেতে পারে। তবে, যদি ব্যথা ১৫-২০ মিনিটের বেশি স্থায়ী হয় এবং শ্বাসকষ্ট বা মাথা ঘোরা অনুভূত হয়, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কখন দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে?

হার্টের ব্যথা সবসময় সাধারণ সমস্যা নয়; অনেক সময় এটি একটি গুরুতর হৃদরোগের লক্ষণ হতে পারে, যা অবহেলা করলে প্রাণঘাতী হতে পারে। যদি বুকের মাঝখানে বা বাম পাশে চেপে ধরা, জ্বালাপোড়া বা সংকোচনমূলক ব্যথা হয় এবং তা ৫-১০ মিনিট পরও না কমে, তাহলে অবিলম্বে হাসপাতালে যাওয়া উচিত। বিশেষ করে, যদি ব্যথার সঙ্গে বাম হাত, কাঁধ, পিঠ বা চোয়ালে ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে এবং মাথা ঘোরা, দুর্বলতা বা অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার অনুভূতি হয়, তাহলে এটি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে।

অনেক সময়, বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তি বা ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের সময় তীব্র ব্যথা না-ও থাকতে পারে, বরং শুধুমাত্র শ্বাসকষ্ট, বমি ভাব, ক্লান্তি বা হালকা অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে। তাই, যদি শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, গায়ে প্রচণ্ড চাপ অনুভূত হয় বা মনে হয় হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে গেছে, তাহলে অপেক্ষা না করে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ১টি অ্যাসপিরিন চিবিয়ে খাওয়া বা সাবলিংগুয়াল (জিহ্বার নিচে) নাইট্রোগ্লিসারিন ট্যাবলেট নেওয়া উপকারী হতে পারে, তবে এগুলো ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উত্তম।

উপসংহার

হার্টের ব্যথার লক্ষণ কেবল একটি শারীরিক সমস্যা নয়, এটি  আমাদেরকে আরো সচেতন হতে এবং নিজেদের জীবনের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে আরো সচেতন করে তোলে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ছোট ছোট পরিবর্তন যেমন স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম ও মানসিক চাপ কমানো- এই সবগুলো হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষায় অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। হার্টের ব্যথার লক্ষণ দ্রুত চিহ্নিত করা ও সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা আমাদের জীবন বাঁচানোর একমাত্র হাতিয়ার।

অতএব, নিজের বা প্রিয়জনের মধ্যে যদি কোনো সন্দেহজনক লক্ষণ দেখা দেয়, তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করুন। মনে রাখবেন, আপনার হার্টই আপনার সুস্বাস্থ্যের মূল উৎস- তাই এটি যত সুস্থ থাকবে, ততই আপনার জীবনও সুখী ও স্বাস্থ্যবান থাকবে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করেছি আপনাকে সচেতন করতে এবং হার্টের ব্যথার লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে যতটা সম্ভব অবগত করতে। তাই আজ থেকেই  একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারার পথে পা বাড়ান এবং যতটা পারা যায় অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি এড়িয়ে চলুন। ধন্যবাদ।

Related posts

Leave a Comment